- ভীষন ভাবনার মধ্যে আছি বুঝলে, একটার পর একটা সিগারেট খেয়ে যাচ্ছি, ভাবনাটাকে তাড়াতে পারছিনা। কী করা যায় বলতো নন্দিতা?
- অপু তুমি এত সিগারেট খাও কেন? সেগারেটের প্যাকেটটাকে ছুড়ে ফেলে দাও, দেখবে ভাবনা শান্ত হয়ে আসবে, ভাবনাটা ঠিক চলে যাবে না কিন্তু ভাবনাটাকে তোমার ভাল লাগবে। তোমার সিগারেট খাওয়ার বাহানাই হল ওই দূশ্চিন্তা। আমি জানি তুমি ভাবনাটাকে তাড়াতে চাও না, কি ঠিক বললাম?
- নন্দিতা তুমি আমাকে চমকে দিতে ভালবাস তাই না? তুমি যতই অস্বীকার করনা কেন আমি জানি ম্যাজিকের কৌশল তোমার জানা।
- ম্যাজিক! ম্যাজিক যদি জানতাম তাহলে সবার আগে মন্ত্র পড়ে তোমাকে দেখতে চাইতাম। এক মুহুর্তের জন্য তোমাকে দেখতে চাইতাম, জ়ানো আমার ভীষন জানতে ইচ্ছা করে মানুষ দেখতে কেমন, আমার ভীষন জানতে ইচ্ছা করে রঙ কি। বাতাসে আমার চুলটা নড়ছে, আমার জানতে ইচ্ছা করে তার ছায়াটা কেমন! তপু জানো আমার ভীষন ম্যাজিক শিখতে ইচ্ছা করে, ইচ্ছে করে ম্যাজিক করে সব কিছু বদলে দিতে, ইচ্ছে করে ইচ্ছেগুলোকে মুক্তি দিতে...ইচ্ছেগুলো জানো ছটফট করে, হাসফাস করে, ইচ্ছেগুলো মুমূর্ষ হয়ে পাথর হয়ে যাচ্ছে। অপু জানো, জানালা দিয়ে যখন রোদ আসে, আমি দাঁড়িয়ে থাকি জানালার গ্রীল ধরে, আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি...আমার চোখ দিয়ে সে আলো প্রবেশ করে না। এই চোখে তালা মারা, সেই তালার চাবি নেই কোন। পৃথিবী বড় নিষ্ঠুর, তাই না অপু?
- তোমার ম্যাজিকটা অন্যখানে। তুমি হাসলেই আমার মনখারাপের দিন শেষ, যদিও তুমি খুব কম হাসো। তোমাকে দেখলেই আমি অন্যরকম কেউ, তোমার জন্য প্রতিদিন আমি একটু করে অন্যরকম কেউ।
- অপু তুমি ভীষন খামখেয়ালী, তুমি ঘোর বুঝো কিন্তু অঘোর বুঝোনা। ঢাকা শহরের কোন ব্যস্ত রাস্তায় রিক্সায় যখন বসে থাকি তখন আমি ভীষন মনোযোগ দিয়ে শুন্তে থাকি চারিপাশের শব্দগুলো। মনে হয় যেন এক শব্দ তৈরীর উৎসব চলছে চারিপাশে। প্রতিটা শব্দের নিজস্ব একটা ছন্দ আছে। আমি সেই শব্দে ঘুরপাক খাই, যেন নদীর কুলে ভাসতে ভাসতে তীরে গিয়ে আছড়ে পড়ি, আবার ভেসে চলে যাই। অন্ধের অনুভূতি ভীষন গভীর, সেই অনুভবে সব হারিয়ে যায়। হাতড়ে হাতড়ে আমি রোদ্র-ছায়ার পার্থক্য করতে পারি না, লাল সবুজের পার্থক্য করতে পারিনা। আমার চোখে জল এলে তুমি যত্ন করে তা মুছে দাও, তোমার চোখে জল এলে আমার বুঝতে দেরি হয়ে যায়, আমি তোমার মুখ হাতড়ে হাতড়ে সে জল খুজে বের করার চেষ্টা করি...... আমার ভীষন নৌকাতে চড়তে ইচ্ছা করে নদীতে, আমাকে নিয়ে যাবে একদিন?
- নদীতে যেতে চাও নন্দীতা? আমি নদী থেকে ফিরে আসতে চাই, নদী আমাকে ছাড়ে না। যা বয়ে যায় তাই নদী, জীবন-ভাবনা সবই নদী। তিস্তা, কর্ণফুলী তার ছবি মাত্র। তোমাকে নিয়ে যাব খরস্রোতা নদীর ঘোলা পানির কাছে। কান পেতে শুনো সেই স্রোতের শব্দ। সেই শব্দটা একটানা, সেই নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে সিগারেটের প্যাকেটটা ছুড়ে ফেলে দিব।
Sunday, February 10, 2008
মানুষ রোদ...মানুষ ছায়া...
- আজকের আকাশের নীলটা ব্যাকুল। ভাবছো রঙের আবার ব্যাকুলতা কিসের!! একদিন তোমাকেও শিখিয়ে দিব সে ভাষা। জানো, এই রকম ব্যাকুলতা আমি দেখেছি আমাদের গ্রামের এক রাখাল বালকের অস্থির চোখে। সেই চোখেই আছে মুক্তির সংগ্রামের বাক্স ভর্তি গুপ্তধন। সেই বাক্স খললেই খলখল হাসি, ফুল বাগানে আমাদের লুকচুরি খেলা, বাশের সাকোর উপর বিকেলের বাতাস, শ্রাবনের কোন সন্ধ্যায় মানুষের খামখেয়ালি মন খারাপের বাতিক...।
- তুমি সব কিছু এমন অদ্ভুত করে ভাব কেন?
- তুমি ভাবনাকেও ব্যাকরনে বাধতে চাও! কোন বিকেলে চা খেতে খেতে তোমাকে খুব ছোট্ট একটা কৌতুক বলে যদি হো হো করে হেসে উঠি, তাহলে তুমি কি তাকেও অদ্ভুত বলবে? আজ বিকেলে নীলক্ষেতে চলে আসো, চা-পুড়ী খেতে খেতে তোমাকে একটা গল্প শোনাব। তারপর তোমাকে নিয়ে যাব এলিফ্যান্ড রোডের সেই সব গলিতে যেখানে স্কুল ছুটির দিন শেষ হয় না কখনও।
- অপু, তুমি এত স্বপ্ন দেখতে ভালবাস কেন?
- হা হা হা, স্বপ্ন দেখি বলেইতো নীলটাকে ব্যাকুল মনে হয়, স্বপ্ন দেখি বলেইতো মুখস্ত বুতামগুলো টিপে তোমাকে ফোন করি বারবার। স্বপ্নের জন্যই অপু সবসময় তোমার পাশে, তোমার হাত ধরে সারা দুপুর বসে থাকে টি এস সি ‘র মোড়ে...
(এরপর প্রায় ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড ওরা চুপ থাকে, অতপর)
- অপু, কথা বলছো না কেন?
(আরো ২০ সেকেন্ড কোন ওরা নিশ্চপ থাকে, যদিও তখন এই ২০ সেকেন্ড অনেক দীর্ঘ ছিল)
- অপু অপু, কিছুতো বলো......
- রোদ্র ছরিয়ে পরেছে বাতাসের বারান্দায়, আমরা এখনও ব্যাকুল ঐ আকাশের মত। আকাশও কি ভালবাসতে জানে? আকাশ কিভাবে জানল মানুষের মনের গোপন সমীকরন, দাগ দাগ ব্যাথার জল তরঙ্গ যা লুকিয়ে থাকে গানের মধ্যে!! আকাশও কিভাবে ঠিক মানুষের মত করে মন খারাপ করে, ব্যাকুল হয়!!
- তুমি সব কিছু এমন অদ্ভুত করে ভাব কেন?
- তুমি ভাবনাকেও ব্যাকরনে বাধতে চাও! কোন বিকেলে চা খেতে খেতে তোমাকে খুব ছোট্ট একটা কৌতুক বলে যদি হো হো করে হেসে উঠি, তাহলে তুমি কি তাকেও অদ্ভুত বলবে? আজ বিকেলে নীলক্ষেতে চলে আসো, চা-পুড়ী খেতে খেতে তোমাকে একটা গল্প শোনাব। তারপর তোমাকে নিয়ে যাব এলিফ্যান্ড রোডের সেই সব গলিতে যেখানে স্কুল ছুটির দিন শেষ হয় না কখনও।
- অপু, তুমি এত স্বপ্ন দেখতে ভালবাস কেন?
- হা হা হা, স্বপ্ন দেখি বলেইতো নীলটাকে ব্যাকুল মনে হয়, স্বপ্ন দেখি বলেইতো মুখস্ত বুতামগুলো টিপে তোমাকে ফোন করি বারবার। স্বপ্নের জন্যই অপু সবসময় তোমার পাশে, তোমার হাত ধরে সারা দুপুর বসে থাকে টি এস সি ‘র মোড়ে...
(এরপর প্রায় ১ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড ওরা চুপ থাকে, অতপর)
- অপু, কথা বলছো না কেন?
(আরো ২০ সেকেন্ড কোন ওরা নিশ্চপ থাকে, যদিও তখন এই ২০ সেকেন্ড অনেক দীর্ঘ ছিল)
- অপু অপু, কিছুতো বলো......
- রোদ্র ছরিয়ে পরেছে বাতাসের বারান্দায়, আমরা এখনও ব্যাকুল ঐ আকাশের মত। আকাশও কি ভালবাসতে জানে? আকাশ কিভাবে জানল মানুষের মনের গোপন সমীকরন, দাগ দাগ ব্যাথার জল তরঙ্গ যা লুকিয়ে থাকে গানের মধ্যে!! আকাশও কিভাবে ঠিক মানুষের মত করে মন খারাপ করে, ব্যাকুল হয়!!
Subscribe to:
Posts (Atom)