Friday, August 22, 2008

সিনোরিনা...

প্রিয় সিনোরিনা, চোখ মুছে নাও শতাব্দির হলুদ খামে,

আদিম অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষাগুলোকে তুমি এবার মুক্তি দাও,

তুমি জানতে চেয়েছিলে পাখি হয়ে ওড়ার অনুভূতি কেমন,তবে হয়ে যাও ব্যালোরিনা,

ছন্দ তোমাকে মুক্তি দেবে, দেবে প্রসারিত বাহুতে ডানার অনুভূতি,

তুমি মুক্তি চেয়েছ, চেয়েছিলে সব সম্পর্ক থেকে মুক্তি,

মুক্তি কি জানতে চাইলে প্যালেস্টাইনের বাতাসে জন্ম নাও,

চে গুয়েভারার ডাইরির গন্ধ শুকে নিও, ওখানেই মুক্তি আছে,

সিনোরিনা,তোমার স্বপ্নগুলো ছিল আকাশ ছোয়া,

তুমি স্বপ্নকে বলতে বাড়ন্ত চারা গাছ,সময়ের ভাজে তারা হারিয়ে গেছে নিয়মিতভাবে,

তুমি অভিযোগ করোনি,

সিনোরিনা জানো…আমারও এমন কিছু স্বপ্ন ছিল,

শর্ষে খেতের মত একটানা রঙ্গিন… বাতাসে বাতাসে ফসলের ঢেউ,

আমার স্বপ্নগুলোও………

তুমি চিঠি লিখতে তোমার মৃত মায়ের এপিটাফের ঠিকানায়,

সেসব চিঠির উত্তর পেতে না বলে তোমার মন ভীষন খারাপ হত,

তুমি জানতে চেয়েছিলে কেন এমন হয়,

এমন না হলেও তো পারত,

সিনোরিনা…

প্রিয় সিনোরিনা,

চোখ মুছে নাও শতাব্দির হলুদ খামে,

তুমি অর্কিডের রঙ দেখে অবাক হতে,

অবাক হতে ম্যাক্সিকান মিউজিকের মন ভালো করার অদ্ভূত ক্ষমতা দেখে,

জানো, আমি এখনো অবাক হই দু একটা কবিতা পড়ে,

ধন্যবাদ মাইকেল আ্যনজেলোকে যার ছবি দেখে এখনো অবাক হতে পারি,

ধন্যবাদ ম্যারি ক্যাসেটকেও,

যার ছবি দেখে অবাক না হওয়াটাই অসম্ভব,

সিনোরিনা, তুমি ভালোবেসেছিলে তোমার প্রতিবেশী জনাথনকে,

সে এক সাধারন কুমারের ছেলে দেখে তোমার বাবা মা তা মেনে নেয়নি,

প্রতি রোববার তাকে তুমি চিঠি লিখতে,

ভীষন কষ্ট ভালোবাসায়, তাই না সিনোরিতা!

আমার ভালোবাসার গল্প তোমাকে পরে আরেকদিন বলব,

রাত বাড়লে জানো…

ভীষন মন খারাপ হয়,

আকাশ দিয়ে এক ঝাক পাখির মত কি যেন উড়ে যায়,

কাক না ফিনিক্স জানি না, তারাও হতে পারে,

চোখ মুছে নেই শতাব্দির হলুদ খামে,

অনুভূতিশুন্য সময়ের বারান্দায় আমিও দাঁড়িয়ে থাকি তোমার সাথে,

হারানো স্বপ্নগুলোকে ভীষন ভালোবাসা দিয়ে আদর করি,

আর ক্ষমা করি ঈশ্বরের স্বার্থপর ক্ষমতাকে,

যা কেড়ে নেয় সব,

সিনোরিনা মানুষ মরে যায়, স্বপ্ন মরে না,

শতাব্দির হলুদ খামে ভেসে বেড়ায় বাতাসে,

আর নক্ষত্রের রাতে সে চিঠি পড়ে শোনায় এক গৃহত্যাগী জোছনা……।।

(বাসে বসে লিখা)