
- রোদের আলোটাও আজ বেশ চোখে লাগছে। এই শহরটা কেমন গদবাধা নিয়মে আজকেও খামখাই ব্যস্ত, মানুষের কি ক্লান্তি আশে না? নাকি আমারি কেবল ক্লান্ত লাগে...নন্দিতা বলো কেমন আছো?
-আমি দিব্বি ভালো আছি, তোমার কি মন খারাপ?
-আমি ভীষন কষ্টে আছি, বুঝলে। আজ সারাদিন ভীষন কষ্টে আছি। হাটতে কষ্ট, হাসতে কষ্ট, আম গাছের পাতায় আলতো রোদে কষ্ট, আমার ঘর-বাহির-জানালায় কষ্ট। কেমন যেন বৃষ্টির শব্দের মত একটানা অনেকখন কষ্ট।
- অপু তোমার কষ্টটা কি আমাকে বলা যায়?
- কষ্ট কি বলা যায়, বলো নন্দিতা? আসলেই কি বলা যায়! বলে ফেললেই কি সব কষ্ট চলে যায়? কষ্ট কি কাউকে দিয়ে দেয়া যায়? সবার জীবনেইতো কত আনন্দ-কষ্ট আসে যায়। তবে আমার কষ্টগুলোই কেবল যাচ্ছে না কেন? সবই তো ফুরায়, আমার কষ্টগুলো ফুরায় না কেন!
- আমাকেতো বলতে পারো। দেখবে ভালো লাগবে।
- আমার খুব গভীর একটা কষ্ট আছে। জানো নন্দিতা, একটা কষ্ট মনের ভেতর অনেকদিন থাকলে তার জন্য মায়া জমে যায়। কষ্টটা আমার মনের ভেতর কোথাও দোলনায় বসে দোল খায়...তখন মানুষগুলোকে একেকটা নদী মনে হয়।
- আমি ছাড়া তোমার আর কে আছে বলো? তোমার কষ্টটা কী অপু?
- আজ না আরেকদিন বলব। আমি ভালো নেই, একটুও ভালো নেই।
- আজ না কেন? আজ বললে কী হয়? তুমি কথা এড়িয়ে যাও কেন?
- সব কেনো-র কারন থাকে না, মানুষের সব কাজেরও কারন থাকে না, অথবা মানুষ তা জানে না। যারা সব কিছুর কারন খুজে তাদের সুখ মরে যায়... বুঝলে নন্দিতা, মানুষের মন বড় বিচিত্র।
- সবার না তুমি আর তোমার মন বেশি বিচিত্র।
-হা হা হা কী তবে বিচিত্র না?
- তা তো জানি না।
- একটা লোমশ বিড়ালের গায়ে হাত দিয়ে দেখো, ঐ স্পর্শটা বিচিত্র, জলে হাটু পর্যন্ত পা দুবিয়ে দেখো, ঐ অনুভূতিটা বিচিত, ভালোবাসা সবচেয়ে বিচিত আর মানুষের জীবন তার চেয়েও......
- তুমি সব কিছু এত অদ্ভুত করে ভাবো কেন?
- কী তবে অদ্ভুত না?
- আবারো!
- আজ সারাদিন ভীষন কষ্টে আছি...
- কি এমন কষ্ট?
- থাক, আজ না, পরে আরেকদিন বলব।।