Monday, November 19, 2007

ঝড়

ভীষন বাতাস, সবাই দৌড়াচ্ছে,
দিকবিদিক,
তুমি আমিও তাই,
ভীষন ঝড়, সব ছিটকে দূরে সরে যাচ্ছে,
তুমি আমিও তাই,
উপড়ে যাচ্ছে গাছের গুড়ি, নিয়ে যাচ্ছে তার ছায়াও,
ঝড় শেষে কিছু মানুষ পাথর হয়ে যায়,
তুমি আমিও তাই,
ঝড় শেষে এসেছিল রেডক্রিসেন্ট, অ্যাম্বুলেন্স, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক,
আমাদের দেখতে কেউ আসেনি,
ঝড় শেষে ত্রান এসেছিল, এসেছিল বিলাতি শুকনো বিসকুট, পাজেরোতে চোরে মন্ত্রী,
আমাদের জন্য কিছু আসেনি, আমরা অপেক্ষায় ছিলাম,
তুমি নিশ্চই সেইসব ঝড়ের ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠেছো,
কিন্ত আমার ছিল খড়ের ছাউনির নরবরে একটা ঘর,
আমি আজও হালকা বাতাসে ভয় পেয়ে যাই,
দৌড়ে পালাই ঝড় ভেবে,

জানো,
আমি এখনো দৌড়ে পালাই,

ঝড় আমার পিছু ছাড়ে না,
আমি কেঁদে বুক ভাসাই,
আমার জন্য আসেনা ত্রান, বিলাতি শুকনো বিসকুট, পাজেরোতে চোরে মন্ত্রী,
তুমিতো আসতে পারতে,
তুমিও কেন এলেনা??

Thursday, November 8, 2007

তোমার মুখে ওই চিহ্নটা কিসের ছিল,
ভীষন গভীর কোন জলের মত দাগ দাগ,
আর রিক্সার হুট নামাতেই তুমি চোখ দুটোকে লুকিয়ে তাকিয়ে ছিলে অন্যদিকে,
ঠিক সাহাবাগ মোড়ে গিয়ে মনে হয় আমি তোমার কয়েকটা দীর্ঘশাস শুনেছি,
তোমার হাত থেকে পরে গেল আমার লেখা চিঠিটা, তুমি খেয়াল করলে না,
তোমার চোখের নিচ দিয়ে তখন ভাসছিল একটা মন খারাপের দাগ,
তোমাকে দেখতে ঠিক অবিকল আমার কবিতার সেই সুতপার মত মনে হচ্ছিল,
ঠিক অবিকল সেই গাড় অন্ধকার দাগ।।

Sunday, November 4, 2007

মানূষের পৃথিবীকে পিছনে ফেলে একদিন........














ধর, আমারা দাঁড়িয়ে আছি কোন বাস স্টপে,শুধু দুজন,

এরপর ভীষন মেঘ,মুষল বৃষ্টি,আমারা দৌড়াচ্ছি,

একটা বিশাল মত গাছের নিছে আমরা দাড়ালাম,
ততক্ষনে আমরা কাকভেজা,গায়ের সাথে লেপ্ট থাকা কাপড় নিয়ে তুমি খুব বিব্রত,রাস্তায় নেই আর একটা মানুষও,
বাস গুলো আটকা পরেছে কোন দূরের রাস্তায়,
অপেক্ষাগুলোকে ভাল লাগছে,

ধর, আমরা সেখানে শুধুই দুজন,
তোমার চোখে তখন মুছে গেছে সব ভয়ের দাগ,
তোমার চোখে তখন স্বপ্নে উপর থেকে উঠে গেছে পরদা,
মনের জানালে খুলে দিতেই
আলো প্রবেশ করছে আমাদের সমস্ত শরীর জুরে,
ধর সেই রাস্তা ধরে আমারা হাটছি বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে,
ওই শহরটাকে পিছনে ফেলে, ওই শহরটাকে আমি ভালো বুঝিনা,


ধর, আমরা হেটে যাচ্ছি পরিচয়হীন এক রাজপথ ধরে,
পিছনে রেখে যত মানুষের নিয়ম,মানূষের পৃথিবী,মানুষের পাপ-পূন্ন্যের হিসাব-নিকাস,
আমাদের সঙ্গে আর কিছু নেই,
ধর, আমরা হাটছি.......সাথে নিয়ে শুধু মানুষের ভালোবাষাটুকু।।

মনে রবে কিনা রবে আমারে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি রং জলা এক পোস্ট বক্সের সামনে দাঁড়িয়ে আছি,
ভাবছিলাম একটা চিঠি পাঠাবো তোমাকে,
কিন্তু আমার চিঠিটা পেলেইতো তোমার মন খারাপ হয়ে যাবে,
কেমন দোটানায় পরলাম বলতো,
তার চেয়ে বরং তুমি কাল চলে আসো ডাক বাংলো রেস্টহাউজের পেছনের বারান্দায়,
কলা পাতা রঙ্গের শারি পরে তুমি দাঁড়িয়ে থেকো রেলিঙ্গের ধার ঘেষে,ঠিক ৫ টায়,
পারলে একটু সময় নিয়ে এসো,খোপায় থাকা চাই ফুল,
চোখে থাকবেনা এক ফোটাও পানি,শুকিয়ে যাওয়া পানির দাগোও না,
আর আমি যদি নিয়ে আসি এক থোকা কদম ফুল তাহলে কেমন হয় বলতো,
তোমার আদরের পোষা পাখিটার খাচা নিয়ে এসো,
কাল পাখিটার খাচা খুলে দিব,
মুক্তির আনন্দে পাখিটা দেখবে কামন ডানা ঝাপটাচ্ছে এদিক-সেদিক,
তখনো তুমি একটুখানি কানতে পারবে না,
আমি তখন নিশ্চই তোমার হাতটা ধরতে পারি,আলতোভাবে শেষ শিহরন,
আমি যে উপন্যাস লিখছিলাম তা কাল শেষ হবে,
উপন্যাসটার নাম কি দেয়া যায় বলতো?
জ়ানো, উপন্যাসের নায়িকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে,
সব ছেড়ে নায়িকা কেনো জানি পালিয়ে জেতে পারে না,
উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠায় নায়ক-নায়িকা দাঁড়িয়ে থাকে রেলিঙ্গের গা ঘেষে,
তাদের আর ঘরে ফিরে যেতে ইচ্ছে হয় না,
উপন্যাসটা শেষ করে কাল তোমাকে দিব,
চাইলে তখন তুমি একটু কানতে পারো,
কান্নার চেয়ে গভীর কখন কী ছিল বলো,
তখন আমরা অক্ষর হয়ে যাবো কোনো সন্ধাবেলার উপন্যাসের,
উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠায় শেষবারের মত ভেজা চোখে তোমাকে দেখে নেব একবার।।

Thursday, November 1, 2007

অন্ধ হয়ে, মানুষের ভালবাসাকে দেখেছিলাম

এই শহরে মানুষের চোখে চোখে লাল বাতি সবুজ বাতি কথা বলে,
এই শহরে মানুষের চোখে আবেগের মানচিত্র,
চোখের ছবি সূক্ষ খুটিনাটি ভুলে ভরা,
চোখে চলে চিঠির পর চিঠি,জমে জমে স্তুপ হয়,
চোখের জলে মানুষের নদী ও নারী,
চোখের ভাষায় কথা হয় রাত্রি দিন,
চোখ থেকে চোখে ঠিকানাগুলো অচেনা,
আমি খুজি রোদে ঝলমল করে ওঠা সেই চোখ,
যাকে দেখেছি সেই কবে স্কুল ছুটির পর রিক্সার ফাক দিয়ে এক ঝলক,
নাম না জানা এক কাজোলের ফ্রেমে বাধানো চোখ,
চোখ....মনের জানালা, যার ফাক দিয়ে উকি দিয়ে মন আকাশ দাখার চেষ্টা করে,
চোখ কোন অনেক পুরাতন মানুষের সাদাকালো বাধানো ছবি,
চোখে ভিক্ষার থালা, চোখে আনন্দ-উৎসব, চোখে করুনা,
চোখে অনিয়মিত মেঘ, হ্মতুচক্র, মানুষের গল্প-নাটক,
কবে যেনো কারো চোখে দেখেছিলাম মানুষের ভালবাসা,
একদিন সে আমাকে জিজ্ঞেষ করল, “তুমি কি আমাকে ভালবাসো?”...
আমি বলেছিলাম, “না”,
কিন্ত আমার চোখ মিথ্যা বলতে পারেনি,
সে আমার হাতটা শক্ত করে ধরল,
চোখ বন্ধ করে দেখলাম, মানুষের দৃষ্টির বাইরে লুকিয়ে থাকা যত রঙ,
মানুষের ভেতর এক গহিন অরন্য, যেখানে হারিয়ে জেতে ইচ্ছে হয় বারবার,
আর মানুষের ভেতর..................মানুষের ভালবাসা।।